সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য এবং অপার সৌন্দর্য

সুন্দর বা অসংখ্য অসংখ্য দ্বীপ নিয়ে গঠিত বনাঞ্চল। সুন্দরী বৃক্ষের প্রাচুর্য কারণে  সুন্দরবনের নামকরণ করা হয় ।সুন্দরবনের অন্য নাম বাধাবান  সুন্দরবন মোট আয়তন ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। বাংলাদেশ অংশে রয়েছে ছয় হজার বর্গ কিলোমিটার যা মোট বনভূমি 62 শতাংশ বন অধিদপ্তর অবশিষ্ট অংশ রয়েছে ভারতে।

সূচিপত্র :সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য ও অপার সৌন্দর্য 

  • সুন্দরবনের নামকরণ ও ইতিহাস
  • সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র 
  • সুন্দরবনের উদ্ভিদ বৈচিত্র 
  • সুন্দরবনের বাঘ 
  • সুন্দরবনের মৎসম্পদ 
  • সুন্দর বনের ভ্রমণের স্থান
  • সুন্দরবনের ইতিহাস 

সুন্দরবনের বেশিরভাগই সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। মাত্র ৯৫ পর্ব কিলোমিটার পটুয়াখালী ও বরগুনায় অবস্থিত। সুন্দরী, গড়ান, গেওয়া, পশুর,  বায়েন বৃক্ষ সুন্দরবনের প্রচুর জন্মে। এই সকল উদ্ভিদের শ্বাসমূল থাকে এছাড়া জন ও গোলপাতা সুন্দরবন হতে সংগ্রহ করা হয় রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, বানর এখানকার প্রধান প্রাণী।

সুন্দরী বড় বড় ক্ষতি তৈরিতে দেয়া সেলাই কারখানায় ধুন্দর পেন্সিল তৈরিতে গরম বৃক্ষের বাকল চামড়া পাকা করার কাজে গৌরবাতা ঘরে ছাউনিতে ব্যবহৃত হয় এর বন থেকে প্রচুর মধু ও মোম আহরণ করা হয়।সু

ন্দরবন নামকরণের কারণ সুন্দরী বৃক্ষের প্রাচুর্য।

সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র 

জীব বৈচিত্রে সীমাবদ্ধ শ্যাম সুন্দরবনের ১৮৭৪ বর্গ কিলোমিটার দূরে রয়েছে নদী-নালা ও দিল মিলিয়ে জলাকীর্ণ অঞ্চল। রয়েল বেঙ্গল টাইগার সহ বিচিত্র নানান ধরনের পাখির, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, বানর, বনবিড়াল, সজারু কুমির ও অসংখ্য প্রজাতি প্রাণী  আবাসস্থল হিসেবে সুন্দরবন পরিচিত।

ম্যানগ্রোভ বোনকে সোয়াম্প, ম্যানগ্রোভ ঝোপ এমন কি মঙ্গল ও বলা হয়ে থাকে। ম্যানগ্রোভ বোন সাধারণত উপকূলীয় আন্ত জলয়ার অঞ্চলে দেখা যায়। ম্যানগ্রোভ বন হল এক ধরনের জলভূমি।ম্যানগ্রোভ বন প্রধানত গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অংশের বৃদ্ধি পায় কারণ হিমাঙ্কের তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না। 

সুন্দরবন উদ্ভিদ বৈচিত্র 

সুন্দরবনকে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। একটি আদ্র গ্রীষ্ম মণ্ডলীয় বনভূমি হিসেবে যা গড়ে উঠেছে সুগঠিত সৈকতে কেউড়া ও অন্যান্য সমুদ্র উপকূলবর্তী বিক্ষু প্রধান বনাঞ্চলে। ঐতিহাসিক ভাবে সুন্দরবনে প্রধান তিন প্রকারের উদ্ভিদ রয়েছে যাদের চিহ্নিত করা রয়েছে পানিতে লবণাক্ত তার মাত্রা সাধু পানি প্রবাহের মাত্রা ও প্রকৃতির মাত্রার সাথে সম্পর্কের গভীরতার উপর ভিত্তি করে। অঞ্চলের সুন্দরী ও গেউয়া এর প্রাধান্যের পাশাপাশি বিক্ষিপ্তভাবে রয়েছে ধন্দন এবং কেওরা। ঘাস ও গুল্মের মধ্যে স্বর্ণল খাগড়া গোলপাতা রয়েছে সুবিন্যস্ত ভাবে। কেওরা নতুন তৈরি হওয়া বনভূমিকে নির্দেশ করে এবং এই পদ্ধতিতে বন্য প্রাণীর জন্য জরুরী বিশেষ করে চিত্রা হরিণের জন্য।

সুন্দরবনের প্রধান বনচিত্রের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সুন্দরী গেউয়া ঝামটি গড়ান এবং কেওড়া। ১৯০৩ সালে প্রকাশিত প্রেম এর হিসেব মতে শরবত ২৪৫ টি শ্রেণী এবং ৩৩৪ টি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে ।

সুন্দর বনের প্রাণী বৈচিত্র 

সুন্দরবনের ব্যাপক প্রানো বৈচিত্র বিদ্যমান। প্রাণী বৈচিত্র সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা সুন্দরবনের কিছু কিছু এলাকায় শিকার নিষিদ্ধ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ অভয়ারণ্যের মতো যেখানে শর্তহীনভাবে বনজ সম্পদ সংগ্রহ করা যায় না এবং বন্যপ্রাণীর জীবনে সামান্যই ব্যাঘাত ঘটে। যদিও এটা স্পষ্ট যে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ হ্রাস পেয়েছে এবং সুন্দরবন এর বাইরে নয় তারপরও সুন্দরবন বেশ অনেক গুলি প্রাণী প্রজাতি ও তাদের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য প্রজাতিদের টিকিয়ে রেখেছে। এদের মধ্যে বাঘ ও শিশুকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে প্রাণী বৈচিত্র সংরক্ষণে ব্যবস্থাপনা ও পর্যটন উন্নয়ন। 

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে বিচিত্র জীব বৈচিত্র্যের আঁধার বাংলাদেশ সুন্দরবন বাণিজ্যিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১২০ প্রজাতির মাছ ২৭০ প্রজাতির পাখি ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায় ৩৫ সরি শিব এবং আটটি উভচর প্রজাতির আবাসস্থল। এ থেকে বোঝা যায় যে বাংলাদেশের সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির একটি (৩৭ শতাংশ পাখি ও ৩৭ শতাংশ স্তন্যপায়ী) এবং এদের একটি বড় অংশ দেশের অন্যান্য অংশে বিরল।

সুন্দরবনের বাঘ 

২০০৪ সালের হিসেব মতে ,সুন্দরবন প্রায় ৫০০ রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাঘের আবাসস্থল যা বাঘের একক বৃহত্তম অংশ। এসব বাঘ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ গড়ে প্রতি বছরে ১০০ থেকে ২৫০ জন মেরে ফেলার কারণে ব্যাপকভাবে পরিচিত। মানুষের বাসস্থানের সীমানার কাছাকাছি থাকা একমাত্র বাঘ নয় এরা বাঘের অব্যাহরণে চারপাশ ঘেরা বান্ধব করে মানুষের ওপর এমন আক্রমণ বিরল। নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা  নেওয়া ভারতীয় অংশের সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণ একটি মৃত্যুর খবর ও পাওয়া যায়নি অন্যদিকে বাংলাদেশি সুন্দরবনে ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত কাল পরিধিতে অসাধারণ এর বেশি বাঘ মানুষের হাতে মারা গেছে। 

স্থানীয় লোকজন সরকারিভবে দায়িত্ব প্রাপ্তরা বাঘের আক্রমণ ঠেকানোর জন্য বিভিন্ন নিরাপত্তা মূলক ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। 

সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ 

সুন্দরবনের অধিবাসীদের অন্যতম জীবিকা নদীতে মাছ ধরা সুন্দরবন সামগ্রিক মাছের ওপর পূর্বাপর কোন বৈজ্ঞানিক গবেষণা হয়নি ফলে মাছের বর্তমান অবস্থা বিলুপ্ত মাছ বিলুপ্তপ্রায় মাছের ওপর ওপর্ত নির্ভর তথ্য পাওয়া যায় না শুধু মানুষ যেসব মাছ খায় এবং যেসব মাছ রপ্তানি উপযোগী সেসব মাছ চিহ্নিত করা হয়েছে ধারণা করা হয় সুন্দরবনের মাস রয়েছে প্রায় 300 প্রজাতির। সাইডেন টেক্কার ও হাই এর পরিপ্রেক্ষিত ১৯৭৮ মধ্যে এর মধ্যে বাণিজ্যিক মাছ ১২০ প্রজাতির অবশ্য বর্নাক শেখের মতে দুই হাজার বাণিজ্যিক মাছ ৮৪ প্রজাতির কাকড়া চিংড়ি ১২ প্রজাতির ও ৯ প্রজাতির শামুক রয়েছে। সুন্দরবনের মত  সম্পদকে দুই  ভাগে ভাগ করা হয়।

সুন্দরবন তথা পৃথিবীর সব ক্রান্তীয় ম্যানগ্রোভ বনের ভৌতিক মাছ হল মেনো মাছ কোথাও ডাহুক মাছ নামেও পরিচিত বনে এদের পাঁচটি প্রজাতির দেখতে পাওয়া যায় প্রজাতি ভেদে এরা নয় থেকে ২২ সেন্টিমিটার লম্বা হয় বনেরশ্বর গঙ্গা নদীতে যথেষ্ট ইলিশ ধরা পড়ে দুই প্রজাতির ইলিশের মধ্যে চন্দনা ইলিশ কম পাওয়া যায়। চার প্রজাতির পেঁচা মাছের মধ্যে রাম ফ্যাসা  কম পাওয়া যায়।

সুন্দরবনের অর্থনীতি 

সুন্দরবনের জনসংখ্যার চার মিলিয়নের বেশি কিন্তু এর বেশিরভাগই স্থায়ী জনসংখ্যা নয় বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে অর্থনীতির যেমন ঠিক তেমনি জাতীয় অর্থনীতিতেও সুন্দরবন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এটি দেশের গণসম্পদে একক বৃহত্তম উৎস। এই বন কাঠের ওপর নির্ভরশীল শিল্পে কাঁচামাল যোগান দেয় এছাড়ো কাঠ জ্বালানি ও মন্ডলের মতো প্রথাগত বনজ সম্পদ পাশাপাশি এই বন থেকে নিয়মিত ব্যাপকভাবে আহরণ করা হয় ঘর চাওয়ার পাতা মধু মৌচাকের মম,  মাছ, কাঁকড়া এবং শামুক ঝিনুক।

উপাদান মুখে ভূমিকার পাশাপাশি সুন্দরবন ঘূর্ণিঝড় প্রবণ বাংলাদেশ উপকূলবর্তী জনসংখ্যা ও তাদের সম্পদের প্রাকৃতিক নিরাপত্তা বলয় হিসেবে ভূমিকা রাখে মানুষের বসবাস ও অর্থনৈতিক কাজে ব্যাপক ব্যবহার হওয়া সত্বেও এখনও সুন্দরবনের ৭০ শতাংশের কাছাকাছি পরিমাণ বনভূমি টিকে আছে, ১৯৮৫ সালের এমন মত জানাই যুক্তরাজ্যের ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ও টি এ)। হাজার ৯৫৯ সাল থেকে ১৯৮৩ সালের মধ্যে বনজ সম্পদের স্থিতির পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে প্রথমত দুইটি ম্যানগ্রোভ প্রজাতির ক্ষেত্রে সুন্দরী এবং গেওয়া।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url