চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার


আজকে আমরা আলোচনা করব চুলের যত্নে কারি পাতার নানা বিদ ব্যবহার সম্পর্কে। চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার উপকারিতা সম্পর্ক। চুল বাহিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এর জন্য চুল অনেক মূল্যবান। তাহলে  চলুন দেরি না করে আলোচনা করা যায়; নিম্নে সূচিপত্রে চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার উল্লেখ করা হলো,

সূচিপত্র: চুলের যত্নে কালি পাতা ব্যবহার করুন ছয়টি উপায়ে 

  • কারি পাতা এবং টক দই এর হেয়ার প্যাক
  • চুলের যত্নে hair tonic হিসাবে কারি পাতার তেল
  • কারি পাতা ব্যবহার করে কিভাবে চুল লম্বা করা যায়
  • চুলের যত্নে কারি পাতার জল
  • চুলের যত্নে কারি পাতার আরো কিছু ব্যবহার
  • ঘন কালো চুল পেতে খাদ্য তালিকার যোগ করুন কারি পাতা
  • চুলের যত্নে কারিপাতা ব্যবহারের উপকারিতা

চুলের যত্নে চুলের কাড়িপাতা ব্যবহার উপকারিতা :

চুলের যত্নে চুলের কারিপাতা ব্যবহার উপকারিতা অনেক সেই প্রাচীনকাল থেকে চুলের যত্নে কারি পাতা নানান ভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে কিন্তু চুলের যত্নে এই কারি পাতা ব্যবহারের উপকারিতা আমাদের অনেকেরই জানা নেই। 
কারি পাতা চুল পাকা রোধ করে: কারি পাতা চুল পাকা রোধ করে আপনারা যারা অল্প বয়সে চুল চুল পাকার সমস্যায় ভুগছেন তারা আজ থেকে চুলে কারি পাতা ব্যবহার শুরু করুন। আপনি কারি পাতা সাথে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে এ প্যাকটি আপনার চুলের ব্যবহার করুন এতে আপনার চুল থাকবে কালো এবং সেইসাথে আপনার বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করবে। 
চুল পড়া রোধ করে কারি পাতা:চুল পড়া রোধ করে কারি পাতা চুল পড়া বর্তমানে সকলেরই সমস্যা। এই চুল পড়া থেকে মুক্তি পেতে আপনি কারি পাতা দুধের সাথে মিশে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টি আপনার চুলে ভালোভাবে লাগান চুলে লাগানোর এক ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত পাতা ব্যবহার করলে আপনি চুল পড়া সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।
কারি পাতা চুল ঝলমলে করে:কারি পাতা   লাগালেও আপনি পাবেন ঝলমলে চুল। কারি পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শুষ্ক চুলকে   প্রাণবন্ত এবং ঝলমলে যার ফলে শুধু কারি পাতা পেজটির পরে চুলের
কারি পাতা খুশকি দূর করে: কারি পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটি রিয়াল, এন্টিফাঙ্গল, এন্টি ইনফ্লামেটরি  বৈশিষ্ট্য। আপনার মাথার ত্বককে খুশকি এবং বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
কারি পাতা চুল বৃদ্ধি করে: প্রতিদিন নিয়ম করে কারি পাতা ব্যবহার করলে এটি আপনার চুল বৃদ্ধি করবে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে। আপনি কিছু কারি পাতা রোদে শুকিয়ে সেটি গুঁড়ো করে এক টেবিল চামচ দইয়ের সাথে মিশে সেটি আপনার চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগান। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে আপনার মাথার চুল এমনিতেই বৃদ্ধি পাবে।
কারি পাতা চুলে আগা ফাটা প্রতিরোধ করে:কারি পাতা চুলে আগা ফাটা প্রতিরোধ করে আপনার ঘন কালো, লম্বা চুল থাকার পরেও যদি চুলের আগা ফাটার সমস্যা থেকে থাকে। তাহলে সেটি দেখতে বেশ খারাপ দেখায়। চুলের এই আগা ফাটা দূর করতে আপনি নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহার করুন কারি পাতা বেটে আপনার চুলে লাগান  এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করার পর লক্ষ্য করবেন আস্তে আস্তে আপনার চুলের আগা ফাটা অনেকটাই কমে গেছে।
কারিপাতা এবং টক দইয়ের হেয়ারপ্যাক:
চুলের যত্নে গায়ের পাতার ব্যবহার করতে আপনি টক দই এবং কারি পাতা একসাথেও ব্যবহার করতে পারেন। কারণ টক দই রয়েছে ল্যাকটিক অ্যাসিড যা আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। আর তাই, কারি পাতা এবং টক দই এর হেয়ার প্যাক চুলের ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
প্রস্তুত প্রণালী ও ব্যবহার: 
  • প্রথমে আপনি কারি পাতা গোলক্লেন্ডার এর প্ল্যান করে একটি পেজ তৈরি করে ফেলুন এরপর চা চামচ কারি পাতার পেস্ট
  •  এর সাথে তিন থেকে চার চামচ দই সাথে ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্র তৈরি করা
  •  অতঃপর এই হেয়ার প্যাকটি আপনার মাথায় মেসেজ করে ভালোভাবে লাগিয়ে ফেলুন।
  •  এমন ভাবে লাগাতে হবে যেন আপনার চুলে আগে থেকে গড়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ চলে আবরণ  যায় এভাবে  ৩০ মিনিট রাখার পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

চুলের যত্নে হেয়ার টনিক হিসেবে কারি পাতার তেল :

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার অনেকটা হেয়ার টনিক হিসেবে কাজ করে। আপনি নারিকেল তেলের সাথে কারি পাতা মিশে তৈরি করে নিতে পারেন এই হেয়ার টনিক  এই হেয়ার টনিক ব্যবহার ফলে আপনার চুলে আদ্রতা যেমন দূর হবে তেমনি এটি আপনার চুলকে গোরা থেকে মজবুত এবং শক্তিশালী করে তুলবে। 
প্রস্তুত প্রণালী ও ব্যবহার :
  • প্রথমে আপনি একটি পরিষ্কার পাত্র নেন এবং পাত্রে নারিকেল তেল ঢালুন এবং তার সাথে কাজ পাতা যোগ করুন।
  • পাতা চারপাশ যতক্ষণ না পর্যন্ত কালো বর্ণের হতে হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালোভাবে নাড়তে থাকুন। 
  • অতঃপর পাতা চারপাশ কালো হয়ে এলে চুলার আঁচ বন্ধ করুন এবং মিশ্রণটি কিছু সময়ের জন্য ঠান্ডা হতে রেখে দিন। 
  • টনিকটি ঠান্ডা হয়ে গেলে আপনি শুধুমাত্র তেলগুলো পাতা থেকে ছেকে নিন এবং মাথায় লাগান। 
  • ভালো করে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত আস্তে আস্তে করে মেসেজ করুন মেসেজ শেষ হওয়ার পর প্রায় এক ঘন্টা এই তেলটি আপনার মাথায় রাখুন এবং এক ঘন্টা পর ঠাণ্ডা পানিতে শ্যাম্পু দিয়ে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন।
  • ভালো ফলাফল পেতে আপনি সবচেয়ে দুই থেকে তিনবার আপনার মাথায় এই তিনটি ব্যবহার করতে পারেন।
হেয়ার টনিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্তকতা: 
আপনার কালকে যদি গুরুতর কোন সমস্যা থাকে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবে এই তেল ব্যবহার করবেন। 
নারকেল তেল এমনিতেই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং আপনার চুলকে ময় দা সাহায্য করে। যা নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুলকে গোড়া থেকে মজবুত করতে সাহায্য করে এবং চুল সরাও রোধ করে।
কারি পাতা ব্যবহার করে কিভাবে চুল লম্বা করা যায়: 
কারি পাতা কোন উপায়ে ব্যবহার করে চুল লম্বা করা যায় তা তা আমাদের অনেকেরই জানা নেই আর লম্বা ঘন এবং ঝলমলে চুল কে না চায় বলুন তো। আপনি যদি লম্বা, ঘন এবং ঝলমলে চুল চান তাহলে আপনার এই আয়ুর্বেদিক মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার চুল প্রাকৃতিকভাবে  যেমন লম্বা হবে তেমনি চুল পড়ার প্রবণতা অনেকটা কমে যাবে । 

চুলের যত্নে কারি পাতার জল: 

চুলের যত্নে কারি পাতার জলবেশ উপকারি আপনার চুল যদি ফ্রিজি বা শুষ্ক রুক্ষ হয়ে থাকে তাহলে কারে পাতার জল আপনার চুলে ব্যবহার করতে পারেন। 
প্রস্তুত প্রণালী ও ব্যবহার:
  • কারি পাতার জল তৈরি করার জন্য আপনি প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্র নেন। 
  • অতঃপর পরিষ্কার পাত্রে এক কাপ পরিমাণ জলের সাথে এক মুঠো টাটকা সতেজ কারি পাতার মিশিয়ে চুলার হালকা আছে ভালো করে ফুটিয়ে নেন। 
  • জল ফোটানো হয়ে গেলে সবশেষে এই জল একটি পরিষ্কার ছাকনি দিয়েছে কেন এবং একটি স্প্রে বোতলে ভোরের সংরক্ষণ করুন। 
  • এভাবে তৈরি হয়ে গেল কারি পাতার জল এবং আপনি আপনার ফেজিং চুলে নিয়মিত এজল স্প্রে করে ব্যবহার করুন এতে আপনার চুলের ফ্রেজিং অনেকটা কমে থাকবে। 

চুলের যত্নে কারি পাতার তৈরি চা: 

চুলের যত্নে কারি পাতার নানাবিদ ব্যবহার রয়েছে কারি পাতার চা এটি শুনে আপনি অবাক হচ্ছেন। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এই কারিপাতার চা আপনার চুলকে ভালো রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে।
আরে পাতা জলে ফুটে নিয়ে তাতে সামান্য লেবুর রস এবং স্বাদমতো চিনি যোগ করে খুব সহজে তৈরি করে ফেলুন কারি পাতার চা। একটানা সাত দিন কারি পাতা চা খেতে থাকুন। এতে আপনার চুলের সকল সমস্যা নিমেষে গায়েব হয়ে যাবে তাছাড়া নিয়মিত পাতার চায়ে  এটি আপনার হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে তেমনি আপনার চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

চুলের যত্নে কারি পাতার আরো কিছু ব্যবহার:

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার এর কিছু উপায় রয়েছে কারি পাতা রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বীজ যা আপনার চুলকে অকালপক্ষতা থেকে রক্ষা করে তাছাড়া কারি পাতা চুলকে প্রোটিন ও আন্টি অক্সিডেন্ট সীমাবদ্ধ হওয়ায় আপনার চুলের খুশকি দূর করতে এবং চুল পড়া কমাতে সহায়তা করে।
ইতিমধ্যে চুলে কারি পাতা ব্যবহারের বেশ কয়েকটি উপায়ে সম্পর্কে আপনাদের জানানো হয়েছে। কারি পাতার সাথে আরো অনেক উপকরণ মিশ্রিত করে আপনি চুলে লাগাতে পারেন। যেমন, 
মেথি পাতা কারি পাতা ও আমলকির ব্যবহার: মেথি পাতা কারি পাতা এবং আমলকির প্যাক চুলের ক্ষেত্রে অনেকটা ম্যাজিকের মতো কাজ করে। এক্ষেত্র ঠিক আগের মতই আধা কাপ পরিমাণ মেথি পাতা কারি পাতা ও আমলকি একসাথে ব্লেন্ডার করে একটি পেজ তৈরি করে ফেলুন এটি এই পেজটি আপনার চুলের আঘাতে গোলাপ পর্যন্ত সম্পূর্ণ ভালোভাবে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা পর শ্যামপুর দিয়ে আপনার চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। 
কারি পাতা ও অ্যালোভেরার ব্যবহার: আপনার চুলের ঘনত্ব বাড়াতে চাইলে কারি পাতার পেজ অ্যালোভেরা জেল একত্রে মিশিয়ে একটি পেজ তৈরি করে এই পেজটি আপনার চুলে লাগান এবং চুলের আগে এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন এভাবে কিছুদিন নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার চুলের ঘনত্ব বাড়বেই।
চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার উপায় হিসেবে আপনি আপনার সুবিধা মত উপরোক্ত যে কোন ব্যবহার করতে পারেন নিয়মিত ব্যবহার আপনার চুল ঘন হবে ঝলমলে হবে এবং উজ্জ্বল করবে। 
ঘন কালো চুল পেতে খাদ্য তালিকায় যোগ করুন কারি পাতা: আপনার দৈনন্দী খাদ্য তালিকায় যা গ্রহণ করবেন অর্থাৎ আপনার শরীর যা গ্রহণ করবে আপনার চুলও সেটি গ্রহণ করবে চুল ঝরে পড়া এবং ঘন কালো চুল পেতে আপনি আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যোগ করতে পারেন এই কারি পাতা। রোজকার খাবারের সাথে আপনি কারি পাতা কিভাবে খেতে পারেন তা নিম্নে দেয়া হলো,
  • কারি পাতা রোদে শুকিয়ে সেটি দিয়ে পাউডার তৈরি করে সেটি তরকারি কিংবা ভাতের সাথে খুব সহজেই মিশে খেতে পারেন। 
  • তাছাড়া আপনি কুচি কুচি করে পুদিনা পাতা এবং কারি পাতার মিশ্রণে সাথে বাটার মিল্ক বা দুধ মিশেও খেতে পারেন। 
  • আবার আপনি কিছু কারি পাতা ভেজে নিয়ে তার মধ্যে সেদ্ধ করে বিভিন্ন ধরনের সবজি সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। 
কারি পাতার একটি সুন্দর নিজস্ব ঘ্রাণ আছে ক্ষুধা বাড়ানোর উপায় হিসেবে কাজ করে এবং এটি আপনার চুলের উপকারে আসে। 

শেষ কথা কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে: 

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার আপনারা নিশ্চয়ই এতক্ষণে আমাদের আর্টিকেল পড়ে জানতে পেরেছেন অনেকে আছেন যারা চুলে অনেক দামী হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন আবার অনেকে চুলের যত্নে ভরসা করেন বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান সে হিসেবে প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে প্রথমে উঠে আসে কালি পাতার নাম কারি পাতার মধ্যে এমন সব উপাদান রয়েছে যা আপনার চুল এবং যত্ন নেয় 
যার কারণে আয়ুর্বেদে ও কারি পাতা ব্যবহার হয় নিয়মিত নিয়ম করে এই কারি পাতার ব্যবহার আপনি আপনার চুলে একাধিক সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে পারেন।উপরিউক্ত এই কৌশল গুলি অবলোবন করে আপনি পেতে পারেন স্বাস্থ্যকর ঝড়মলে সিল্কি ও লম্বা চুল। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন ,ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url